এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার প্রশ্নে ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ওঠা উসকানির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানীকে তদন্ত কমিটিতে প্রধান করে একই শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ও উপ-কলেজ পরিদর্শককে কমিটির সদস্য করা হয়। এ কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এবং তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাবে যশোর শিক্ষা বোর্ড।
মঙ্গলবার যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক অংশের প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের চিহ্নিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চিহ্নিতদের তালিকা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে ।
বোর্ড জানায়, বাংলা প্রথমপত্রের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্রটি যশোর শিক্ষাবোর্ড দিয়েছে। প্রশ্নকর্তা ঝিনাইদহের মহেশপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির সঙ্গে জড়িত । প্রশ্নপত্র পরিশোধনের দায়িত্বে ছিলেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দীন , সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম।
এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অধ্যাপক আহসান হাবীব বলেন, ‘তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হবে। পাশাপাশি অপরাধের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে শোকজ করা হবে।’
এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নে ধর্মীয় স্পর্শকাতর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। পরীক্ষার প্রশ্নে এ ধরনের বিষয় তুলে ধরায় সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান অনেকে।
রোববার সারাদেশে এইচএসসি বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা হয়। প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নে বলা হয়, ‘নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিন। অনেক সালিস বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে।’
মাহফুজা ৮-১১