বরিশালে লঞ্চ, স্পিডবোট, বাস, মাইক্রোবাস, থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌ ও সড়কপথে গণপরিবহনে প্রায় সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বরিশাল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
শুক্রবার ভোর থেকে কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লাসহ ১৪টি অভ্যন্তরীণ রুটে এবং রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে ২১টি অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। একইভাবে বরিশাল নদীবন্দর থেকে ১২টি নোরুটে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।
এদিকে জেলা বাস মালিক সমিতি বরগুনায় দুদিনের জন্য সব ধরনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে । আজ শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের কথা নিশ্চিত করেন জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছগির মিয়া।
সড়কে থ্রি হুইলার ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘট ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানান বাস মালিক সমিতির নেতারা । অটোরিকশার বেপরোয়া গতির জন্য দুর্ঘটনার শিকার হয় যাত্রীবাহী বাস। এতে সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি হয় তেমনি পরিবহন ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়। তাই এই ধর্মঘট ডেকেছেন তারা।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছগির মিয়া বলেন, সড়কে অবৈধ গাড়ির দৌড়াত্ম ঠেকাতে প্রশাসনের কোন নজর নেই। একটি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়লে অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয় মালিকের । এজন্য আমরা দুই দিনের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি এবং পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
লঞ্চ শ্রমিকরা বেতন ভাতা বাড়ানোর দাবিতে দুদিনের জন্য লঞ্চ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। লঞ্চ শ্রমিকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে ।
এদিকে বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। বরিশালের নথুল্লাবাদ ও রূপাতলি বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বিকল্প উপায়ে আতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। যাত্রীরা বিভিন্ন স্থানে গাড়ি পরিবর্তন করে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি মাহবুবুল আলম ফারুক মোল্লা বলেন, বরিশালে বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশে যোগদান করতে না পারে সেজন্য বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তারা । শুধু বরিশাল নয় প্রত্যেক বিভাগের সমাবেশের সময়েই এমন আচরণ করে আসছে সরকার । বরিশাল ঘাটে বরগুনার লঞ্চ থামে না, তারপরও লঞ্চ চলাচল পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে।
বরিশাল পটুয়াখালী মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউছার হোসেন শিপন বলেন, ‘মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচলবন্ধের দাবিতে তারা আগে থেকেই ৪ ও ৫ নভেম্বর ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে মানুষ বিষয়টি আগে থেকেই জানতো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ ( বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, ‘লঞ্চে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বরিশাল-ভোলা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সকাল থেকে অভ্যন্তরীন সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। কোনো লঞ্চ যাত্রী নিয়ে বরিশাল ছেড়ে যায়নি, আবার কোনো লঞ্চ বরিশালে আসেওনি। যদিও লঞ্চে বন্ধের বিষয়ে মালিক বা শ্রমিক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।’
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে বাস ও লঞ্চ মালিকদের সাথে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করা হবে।
মাহফুজা ৪-১১