জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যাকাণ্ডের মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবি’র চার সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন । রায়ে এক আসামিকে খালাস দেয়া হয়। বুধবার এ রায় ঘোষণা করেনবিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা , সদস্য লিটন মিয়া , সাখাওয়াত হোসেন ও আহসান উল্লাহ আনসারী । রায়ে খালাস পেলেন জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলী । এদের মধ্যে আহসান উল্লাহ পলাতক আছেন । বাকি তিন আসামি মাসুদ রানা, ইছাহাক ও লিটন কারাগারে আছেন।
১৯ সেপ্টেম্বর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য উচ্চ আদালতের একই বেঞ্চ ২১ সেপ্টেম্বর এ দিন ধার্য করে দেন ।
আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ। তাকে সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ,সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ মান্না, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাকির হোসেন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও শামসুল ইসলাম। পলাতক এক আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান ।
৪ সেপ্টেম্বর রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিওকে হত্যার দায়ে জেএমবির পাঁচ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিল আবেদনের বিষয়ে শুরু হয় শুনানি। এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষ হয় ১৯ সেপ্টেম্বর এবং রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেন আদালত।
২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার জাপানি নাগরিক হোশি কুনিওকে হত্যার দায়ে জেএমবির পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ওই পাঁচজনের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এরপর মৃত্যুদণ্ডের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয় এবং আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। ওই আপিলের পেপার বুক প্রস্তুত হওয়ার পরে সেটি শুনানির বেঞ্চ নির্ধারণ হলে শুরু হয়আপিলের শুনানি । আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর আট কার্যদিবসে শুনানি শেষ হয়।
২০১৬ সালের ৭ আগস্ট জেএমবির আট জঙ্গির বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী। ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর মামলাটি রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালতে স্থানান্তরিত হলে সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে শুরু হয় বিচারিক কার্যক্রম। মামলায় বাদীপক্ষের ৫৫ জন সাক্ষী এবং আসামিপক্ষের একজন সাফাই সাক্ষীর আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ।
২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও বাংলাদেশে আসেন। তিনি রংপুরের কাউনিয়ার কাচু আলুটারি গ্রামে গবাদিপশুর খাদ্য উন্নত মানের ঘাসের চাষ করতেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর ৬৬ বছর বয়সী কুনিওকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
মাহফুজা ২১-৯