আদালতের মাধ্যমে খায়রুন নাহারের আটক স্বামী মামুন হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সোমবার ১৫ আগস্ট দুপুরে আদালতে নেয়া হয় মামুনকে এবং বিকেলে তাকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দিনের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘মামুনের বিরুদ্ধে পুলিশ সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি । এ কারণে ৫৪ ধারায় তাকে আদালতে পাঠানো হয় এবং সে জামিন পেতে পারে। মঙ্গলবার পুনরায় জামিনের জন্য আবেদন করা হবে।’
কোর্ট দারোগা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু তদন্ত চলছে খায়রুন নাহারের মামলাটির, সে কারণে তাকে জামিন দেয়ার বিরোধিতা করা হয়েছে এবং আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান, খায়রুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচাতো ভাই গুরুদাসপুরের খামার নাচকৈড় গ্রামের সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেন।
১৪ আগস্ট বিকেলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করে। পরে নাটোর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয়।
নাটোর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সামিউল ইসলাম জানান, তিন সদস্যের একটি চিকিৎসক দল তার ময়নাতদন্ত শেষ করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘খায়রুন এর মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। আরও বিস্তারিত জানা যাবে ভিসেরা রিপোর্ট এলে ।
গেল রাতেই খায়রুন নাহারের মরদেহ তার বাবার বাড়ি গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামার নাচকৈড় মহল্লায় নেয়া হয়। পরে আবু বকর সিদ্দিকী কওমি মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে নাচকৈড় কবরস্থানে দাফন করা হয় মরদেহ।
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন পুলিশের একাধিক টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং সিসিটিভির ফুটেজও পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছিল না। খায়রুন এর কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামুন ব্যবসা করতেন। খায়রুনের ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দেয়া নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে মামুন রাগ করে রাত ২টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে ভোরে বাড়ি ফিরে দেখেন খায়রুন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়েছেন।
আগের স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ফেসবুকে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় খায়রুন এর এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন। সম্প্রতি বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে এ অসম বিয়ে মামুনের পরিবার মেনে নিলেও খায়রুনের পরিবার মেনে নেয়নি। তারা নাটোরে বলারীপাড়া এলাকায় মোল্লা ম্যানশনের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।
মাহফুজা ১৫-৮