আর্জেন্টিনা না ইতালি কাদের হাতে উঠবে ফিনালিসিমার শিরোপা। দিনভর চিলো এমন জল্পনা কল্পনা। সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটা বাজি ধরা আরও কতকি। অবশেষে ইতালিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফিনালিসিমার চ্যাম্পিয়ন হলেন লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। আর বাজিতে জিতে গেলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরাই।
৯০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শুরু থেকে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে আলবিসেলেস্তেরা। একর পর আক্রমন করে দর্শকদের আনন্দ দিতে থাকে।
প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে বেশি সময় নেয়নি লিওনেল মেসিরা। ম্যাচের ২৮ মিনিটে বামদিক দিয়ে ইতালির রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে পরাস্ত করে বক্সে ঢুকে মেসি বল বাড়িয়ে দেন লাওতারো মার্টিনেজকে। লাওতারো খুব কাছ থেকে ডান পায়ের শটে বল জালে জড়ান। তাতেই ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচের চিত্রটাই বদলে দেয় আর্জেন্টিনা।
এই এক গোলের পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি লিওনেল মেসিদের। ইতালি এরপর মরিয়া হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নরা গোল শোধের চেষ্টা করেছে। আর আর্জেন্টিনা সেসব সামলে প্রতি আক্রমণে উঠে এসেছে। বিরতির ঠিক আগে তেমনই এক প্রতি আক্রমণে দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। গোলরক্ষক এমিলিয়ানোর বাড়ানো বল প্রতিপক্ষ অর্ধে লাওতারোকে পেয়ে যায়, সঙ্গে ছিলেন কোপা জয়ের নায়ক আনহেল ডি মারিয়া। তাতেই ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতির আগে তাও বারদুয়েক আর্জেন্টিনা রক্ষণকে একটু দুশ্চিন্তা উপহার দিতে পেরেছিল ইতালি। দুই গোল খেয়ে বিরতি থেকে ফিরে সেটাও উবে গেল যেন। তাতে খেলাটা হয়ে পড়ল আর্জেন্টিনা আক্রমণ আর ইতালি রক্ষণের।
যার মধ্যে দুটো ছিল মেসির। প্রথম গোলের যোগান দিলেও শুরুর ৪৫ মিনিটে মেসি খানিকটা নিশ্চুপই ছিলেন যেন। তবে স্বরূপে ফিরেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে প্রতিপক্ষ বক্সে গিয়ে শট করেছিলেন তিনি, সেটা ঠেকিয়ে দেন ডনারুমা। মিনিট কয়েক পর আবারও তার শট একই পরিণতি পায়। শেষ মুহূর্তে আর্জেন্টিনার জয় যখন মুহূর্তের দূরত্বে, তখন তার সলো রান আটকে দেয় ইতালি রক্ষণ। তখনই মেসি বলটা বাড়ান মিনিট দুয়েক আগে মাঠে আসা পাওলো দিবালাকে। বক্সের সামনে থেকে দারুণ এক ফিনিশে ব্যবধানটা আরও বাড়ান তিনি। তাতে একপেশে ফাইনালটা আরও একপেশে করে আর্জেন্টিনা ৩-০ ব্যবধানে হারায় ইতালিকে।
ম্যাচের ৫৬ শতাংশ বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার কাছে। তারা আক্রমণ শানিয়েছিল ১৭টি। তার মধ্যে অন টার্গেটে ছিল ৭টি। এর মধ্যে ৩টি গোল হয়। অন্যদিকে ৪৪ শতাংশ বল দখলে রাখা ইতালি আক্রমণ শানিয়েছিল ৭টি। তার মধ্যে অন টার্গেটে ছিল ৩টি। কিন্তু কোনো গোল হয়নি।
এটা ছিল আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি কাপ তথা কাপ অব চ্যাম্পিয়নসের তৃতীয় আসর। ১৯৮৩ সালে প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উরুগুয়ে। এরপর সবশেষ ১৯৯৩ সালে ফিনালিসিমার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেবার ডেনমার্কের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে শিরোপা জিতেছিল দিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বাধীন আর্জেন্টিনা। এর ২৯ বছর পর লিওনেল মেসির নেতৃত্বে আবার ফিনালিসিমার জিতলো আর্জেন্টিনা।