আফগানিস্তানের পৃথক চারটি বিস্ফোরণে অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০২ জন।
বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের পৃথক চারটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তা। খবর সিনহুয়ার।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপ এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটেছে মাজার-ই-শরিফের একটি শিয়া মসজিদে। এ হামলায় দূরনিয়ন্ত্রিত ‘বুবি-ট্র্যাপড ব্যাগ’ ব্যবহার করা হয়েছে।
আইএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যখন হামলা চালানো হয়, তখন মসজিদটি শিয়া মুসল্লি দিয়ে পূর্ণ ছিল। আইএসের একজন সাবেক নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
দ্বিতীয় হামলাটি ঘটেছে কুন্দুজের একটি থানার কাছে। এ হামলায় একটি গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি বিস্ফোরণে চারজন নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন।
তৃতীয় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে দেশটির পূর্ব নাঙ্গারহার প্রদেশে তালেবানদের একটি গাড়িতে। এতে চার তালেবান সদস্য নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া চতুর্থ বিস্ফোরণ ঘটেছে রাজধানী কাবুলের নিয়াজ বেইক এলাকায়। এ এলাকায় একটি মাইন বিস্ফোরণে দুই শিশু আহত হয়েছে।
মাত্র দুদিন দিন আগে কাবুলের শিয়া অধ্যুষিত এলাকার আব্দুল রহিম শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ে দুটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল এবং ছয়জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছিলেন। মঙ্গলবারের এ বিস্ফোরণের পর বৃহস্পতিবার আবার ভয়াবহ হামলার খবর পাওয়া গেল।
এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে প্রাদেশিক জনস্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র আহমেদ জিয়া জিন্দানি বলেছেন, ‘আইএসের হামলার পর সর্বত্র রক্ত আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অসংখ্য মানুষ তাঁদের স্বজনদের খুঁজতে স্থানীয় হাসপাতালে ভিড় করছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাজার-ই-শরিফের শেহ দোকান নামের মসজিদটিতে মুসল্লিরা নামাজ পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মসজিদটিতে বেশিরভাগ হাজারা সম্প্রদায়ের মুসলমানরা নামাজ পড়েন। আফগানিস্তানে হাজারা সম্প্রদায়েরে মুসলমানেরা প্রায়ই আইএস গোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়।
মাজার-ই-শরিফের একজন নারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি কাছাকাছি একটি বাজারে কেনাকাটা করছিলেন, তখন হঠাৎ মসজিদের কাছে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী বলেন, ‘বিস্ফোরণে মসজিদের কাচ ভেঙে গেছে। ভয় ও আতঙ্কে সবাই ছোটাছুটি করছিল।’