নওগাঁর বদলগাছীতে তিন ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক মাহমুদুল হাসান ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন । এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
এদিকে তথ্য প্রমাণ না থাকায় মামলাটি থেকে খালাস পেয়েছেন ১০ জন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- উপজেলার উজালপুর গ্রামের সাইদুল, আইজুল হক, হেলাল হোসেন, জালাল হোসেন, বেলাল হোসেন, জায়েদ, আবুল হোসেন, মোস্তফা ও সোহাগ আলী। এদের মধ্যে সাইদুল, জায়েদ ও সোহাগ পলাতক রয়েছেন। অন্যরা রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হলেন- হাসেম আলী। তিনিও একই গ্রামের বাসিন্দা। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উজালপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও তাঁর ভাই আমজাদ হোসেন ও শ্যালক আব্দুল ওয়াদুদের পরিবারের সঙ্গে প্রতিপক্ষ হাসেম আলী, সাইদুল, আইজুল হেলালসহ অন্য আসামিদের বিরোধ চলছিল। জমির দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালের ৬ জুন বিকেল ৩টার দিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শহিদুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন ও আব্দুল ওয়াদুদকে হত্যা করে আসামিরা।
এ ঘটনায় নিহত শহিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে ২৪ জনের নামে বদলগাছী থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার আগেই তিন আসামির মৃত্যু হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০ জনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা।
২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এই মামলায় বাদী ও বিবাদী পক্ষের ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত সোমবার রায় ঘোষণা করলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোজাহার হোসেন বলেন, দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ বাদীপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় ২০ আসামির মধ্যে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন আদালত।
মামলার বাদী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এই রায়ে আমরা খুশি। অবিলম্বে আসামিদের সাজা কার্যকর হলে আমারা বাবা, চাচা ও মামার আত্মা শান্তি পাবে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।’